ঘরে বসে আয় করার ৪টি সেরা উপায়

ঘরে বসে আয় করার ৪টি সেরা উপায়

Make Money Online: যারা ঘরে বসে ইনকাম করতে চান তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইন্টারনেটের কল্যানের আমরা প্রতিনিয়ত যে সব সুফল পাচ্ছি তাদের মধ্যে অন্যতম হলো ঘরে বসে আয় করা। বাংলাদেশের ৩য় সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয় ফ্রিলান্সিং এবং আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে। করনা মহামারীর সময় বাংলাদেশে ফ্রিলান্সার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। আপনি চাইলে ঘরে বসে ইনকাম করতে পারবেন। আমরা অনেকে মনে করি ঘরে বসে ইন্টারনেট থেকে আয় করা অনেক সহজ। কারন এমন কিছু ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ রয়েছে যারা ঘরে বসে আয় করার প্রলোভন দেখয়ে থাকে। আদতে এসব ওয়েবসাইট বা অ্যাপ থেকে সাময়িক কিছু ইনকাম করা গেলেও স্থায়ীভাবে ইনকাম করে ক্যারিয়ার এর উন্নতি করা সম্ভন নয়।


Make money online


আজকে আপনাদের সাথে অনলাইন ইনকামের ৪টি উপায় আলোচনা করবো। যেখানে আপনি প্রতিনিয়ত কাজ করে নিজের ক্যারিয়ারের উন্নতি করতে পারবেন।

১) ফ্রিলান্সিংঃ ঘরে বসে আয় করার সর্বোত্তম উপায় হলো ফ্রিলান্সিং। আপনার যদি কোন বিষয়ে দক্ষতা থেকে থাকে তাহলে সেই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ঘরে বসে ইনকাম করতে পারবেন। তবে এজন্য আপনার দক্ষতা লাগবে। দক্ষতা ছাড়া আপনি ফ্রিলান্সিং করতে পারবেন না। ঘরে বসে আয় করার জন্য আপনাকে প্রথমে জানতে হবে ঘরে বসে কি কি সার্ভিস প্রদান করা যায়। এর জন্য আপনি টপ কয়েকটা ফ্রিলান্সিং সাইটে ঘুরে আসতে পারেন। যেমনঃ Fiverr, Upwork, Freelancer.com, People Per Hour ইত্যাদি ওয়েবসাইট থেকে ঘুরে আসতে পারেন। এসব সাইট ভিসিট করলে আপনি বুঝতে পারবেন কোন কাজের জন্য কোন দক্ষতা দরকার এবং আপনি কোন বিষয়ে দক্ষ। এসব সাইটে বিভিন্ন ধরনের কাজ পাওয়া যায়। যেমনঃ ওয়েব ডেভলপমেন্ট, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট,  ভিডিও এডিটিং, 2D-3D এনিমেশন, আর্টিকেল লেখা ইত্যাদি। দক্ষতা অনুযায়ী এসব সাইটে সার্ভিস দেয়া খুবই সহজ। কাজ শেষে বিভিন্ন ধরনের অনলাইন পেমেন্ট মাধ্যম বা সরাসরি ব্যাংক একাউন্টে পারিশ্রমিক চলে আসে।




২) ওয়েবসাইট/ব্লগঃ ঘরে বসে অনলাইন থেকে ইনকাম করার জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ব্লগিং বা নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে আয়। এ জন্য আপনাকে একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। বিভিন্ন ধরনের ফ্রি ব্লগ সাইট রয়েছে। যেখানে আপনি ফ্রিতে ব্লগ সাইট তৈরি করতে পারেন। এছাড়াও বর্তমানে খুব অল্প টাকা খরচ করেই মোটামোটি ভাল মানের ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। সে সব ব্লগ বা ওয়েবসাইটে জনপ্রিয় বিষয়ে লেখা লেখি করে বা চাহদা সম্পন্ন বিষয়ে আর্টিকেল পাব্লিস করতে হবে। ধীরে ধীরে ব্লগ বা ওয়েবসাইটে ভিসিটর বাড়লে   Google AdSense এর জন্য আবেদন করতে হবে। Google AdSense এপ্রুভ হয়ে গেলে গুগল এর পক্ষ থেকে ব্লগ বা ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন বসিয়ে আয় করা যায়। পাঠকরা যদ বেশি বিজ্ঞাপন দেখবে এবং বিজ্ঞাপনে ক্লিক করবে তত বেশি ইনকাম হবে।


How to make money from blogging


৩) এফিলিয়েট মার্কেটিংঃ এফিলিয়েট মার্কেটিং হলো অন্যের পন্য বিক্রি করে আয় করা। আপনি যদি কারো পন্য বিক্রি করে দতে পারেন তাহলে সেই পন্য বিক্রির উপর নির্দিষ্ট কমিশন পাবেন। আপনি যত বেশি পন্য বিক্রি করতে পারবেন আপনার ইনকামও তত বেশি হবে। এখন প্রশ্ন হলো এসব পন্য আপনি কোথায় বিক্রি করবেন? সত্যি কথা বলতে এর নির্দিষ্ট কোন উত্তর নেই। এফিলিয়েট মার্কেটিং অনেক ভাবে করা যায়। উদাহরন হিসেবে বিলা যেতে পারে ইউটিউবাররা বিভিন্ন পন্যের ভিডিও তৈরি করে তাদের চ্যানেলে আপলোড করে এবং সেই ভিডিও দেখে দর্শকরা পন্য কিনলে তারা সেখান থেকে কমিশন পায়। এফিলিয়েট করার জনপ্রিয় মাধ্যম হতে পারে ফেসবুক। এছাড়াও ব্লগ সাইট, ওয়েবসাইট,  বা ইন্সট্রাগ্রামের মাধ্যমেও এফিলিয়েট মার্কেটিং করা সম্ভব। একে বলা হয় সোস্যাল মার্কেটিং। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এফিলিয়েট মার্কেটিং প্রতিষ্ঠান হচ্ছে Amazon। এছাড়াও Alibaba থেকেও এফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম করা যায়। বাংলাদেশে বেশ কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান এফিলিয়েট সুবিধা চালু করেছে। 


How to make money from affiliate marketing


৪) ইউটিউবিংঃ ঘরে বসে আয় করার সবচেয়ে সেরা উপায় সম্ভবত ইউটিউব। ইউটিউব থেকে আর করা সবচেয়ে সহজ। ইউটিউব থেকে ইনকাম করতে হলে ভিডিও তৈরি করতে হবে। স্মার্টফোন ব্যবহার করে অথচ ইউটিউব দেখে না এমন মানুষ আপনি খুজে পাবেন না। কারন ইউটিউব অ্যাপটি মোবাইলে আগে থেকেই ইন্সটল করা থাকে। বিপুল সংখ্যক দর্শকদের বিপরিতে ইউটিউবে পর্যাপ্ত পরিমান চাহিদামত ভিডিও নেই। আপনি যদি দর্শকদের চাহিদা বুঝে ভিডিও তৈরি করতে পারেন তাহলে অতি অল্প সময় ইউটিউবে সফল হতে পারবেন। তবে অনেক ইউটিউবার ইউটিউবে মানহীন কন্টেন্ট তৈরি করে আবার অনেকে মাত্র গুটি কয়েক ভিডিও আপলোড দিয়ে হতাস হয়ে পরে।  তবে ইউটিউব থেকে টাকা উপার্জন করা ততটা সহজ টিকে থাকা ততটা কঠিন। কোন একটা ইউটিউব চ্যানেল যখন ১ হাজার সাবস্ক্রাইবার এবং ১ বছরের মধ্যে ৪ হাজার ঘন্টা ওয়াচটাইম অর্জন করতে সক্ষম হবে তখন ইউটিউব সেই চ্যানেলে Google AdSense এর অনুমোদন দেবে। এর ফলে ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে ইনকাম চলতে থাকবে। Google AdSense থেকে উপার্জিত টাকা সরাসরি ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করা যায়। ইউটউবিং করার জন্য বেশ কিছু দক্ষতার প্রয়োজন হয়। এদের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হল ভিডিও এডিটিং। বর্তমানে হাতে থাকা স্মার্টফোন দিয়ে সহজে ভিডিও এডিটিং করা যায়।


How to make money from youtube


ঘরে বসে অনলাইন থেকে উপার্জন যতটা সহজ মনে করি আসলে ততটা সহজ নয়। অনলাইন থেকে উপার্জনের মূল মন্ত্র হলো ধৈর্য, একাগ্রতা এবং কাজের লেগে থাকা। অনলাইন কাজে আপনি যত বেশি একাগ্র হবেন আপনি তত দ্রুত সফলতা পাবেন। অযথা অনলাইনে বেশি টাকা ইনকাম করতে গিয়ে প্রতারনার শিকার হবেন না। মনে রাখবেন দক্ষতা থাকলে টাকা এমনি আসবে। তাই অযিথা সময় নষ্ট না করে দক্ষতা অর্জনের চেষ্টা করুন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ